ভূতচতুর্দশী


বহু প্রাচীনকাল থেকেই ভূতের সঙ্গে বাঙালি জাতির সম্পর্ক নিবিড়ভাবে  জড়িয়ে আছে । বহু গল্প, কবিতা,উপন্যাসের মাধ্যমে ভূত হয়ে উঠেছে বাঙালির  জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ । আর বাঙালি জাতির কাছে ভূতচতুর্দশী হল একটা  বিশেষ দিন । এই বিশেষ দিনটাতে বাঙালিরা মনে করেন ভূতেরা আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়ায় । সেইজন্যে ভূতেদের হাত থেকে রক্ষা পেতে  বাঙালিরা এই দিনটিতে চোদ্দো শাক খান,  চোদ্দো পুরুষের জন্য জল দেন, চোদ্দোটি প্রদীপ জ্বলিয়ে এই দিনটিকে পালন করেন  , সেই অতীতকাল  থেকেই এই রীতি প্রচলিত । 
কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীর দিন ভূতচতুর্দশী পালন করা হয় অথাৎ কালি পূজোর আগের দিন ।
বাঙালিদের এই রীতির সঙ্গে পাশ্চাত্যের একটি রীতির খুব সাদৃশ্য দেখা যায় । যা  'Halloween ' রীতি নামে পরিচিত । সে যাইহোক, এই ভূতচতুর্দশী আসলে কি?  এর পৌরাণিক ব্যাখাই বা কি ? সত্যিই কি এই ভূতচতুর্দশীর সাথে কোন ভূতের সম্পর্ক আছে?  না ভূতচতুর্দশীর সাথে ভূতের বিশেষ সম্পর্ক নেই । এর পিছনে যে পৌরাণিক কাহিনীটি আছে তা হল - 
স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু বামনরূপে এসে  বলি রাজার কাছে দান চান । কিন্তু বলি রাজা বুঝতে পারেন যে ভগবান বিষ্ণু এসেছেন । তবুও তিনি দান দিতে রাজি হন এবং বামনরূপী ভগবান বিষ্ণু তার কাছে তিনটি পা রাখার মতো জায়গা চান । বলি রাজা জায়গা দিতে সম্মত হলে, তিনি একটি পা রাখেন স্বর্গে আর একটি পা রাখেন মর্তে এবং তার নাভি থেকে আর একটি পা বেরোয় ; যেটি বলি রাজার মাথায় রাখেন তিনি । যারফলে বলি রাজা ধিরে ধিরে পাতালে প্রবেশ করেন । যেহেতু বলি রাজা জেনেশুনেই ভগবান বিষ্ণুকে দান দিয়েছিলেন তাই তিনি নরকাসুর নামে মর্ত্যলোকে পূজিত হন ।

কিন্তু পৌরাণিক কাহিনী যতই যাই হোক না কেন বাঙালিদের কাছে ভূতচতুর্দশী মানে গাছমছমে একটা ভূতুড়ে  আমেজ ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রঘু ডাকাত ও তার ডাকাত কালীর মন্দিরের ইতিহাস

Kolkata's Some Memorable Horror Place ( কলকাতার কিছু বিখ্যাত ভূতুড়ে স্থান )