পোস্টগুলি

মে, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

স্মৃতির আঙিনায়

ছবি
                                  স্মৃতির আঙিনায়  আজ তিথির মনটা একদম ভাল নেই। আজকাল প্রায়ই মনটা খারাপ হয়ে যায়, কেন যে এমনটা হয় ? তার কোন উত্তর সে খুঁজে পায়না । জীবনের কটা উত্তরই বা খুঁজে পেয়েছে সে? না ! এখন আর সেসব নিয়ে ভাবে না। কেন জানি না, একটা দীর্ঘশ্বাস আপনা হতেই বেরিয়ে আসে । কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আনমনে কখন যে জানালার পাশে এসে বসলো, খেয়ালই করেনি। ছুটির দিনগুলোতে এই ভাড়াবাড়ির জানালা দিয়ে একটুকরো আকাশ দেখতে বড়ো ভালোলাগে তার। এভাবেই সারাটাদিন কেটে যায়। দূরের আকাশ, গ্রীষ্মের দুপুরের নিস্তব্ধতা যেন চারপাশটাকে আরও মোহময় করে তোলে । আর এইরকম গ্রীষ্মের নিস্তব্ধতাময় দুপুরের রোদের তেজ যত বাড়তে থাকে, চারদিকে যেন এক বিরাট শূন্যতা গ্রাস করে । এক এক সময় যেন মনে হয়, কোন অসীম শূন্যতা বিরাজ করছে তার চারপাশে, কোথাও কেউ নেই । সেই সবসময় বড়ো একা মনে হয় নিজেকে। বড়ো ফাঁকা ফাঁকা লাগে, একরাশ নিঃসঙ্গতা ঘিরে ধরে তাকে। তবুও সে চাতকের মতোই বসে থাকে এক টুকরো আকাশ, দূরের ঐ মনখারাপি দুপুরের নিস্তব্ধতা দেখার জন্য । ...

আশার আলো

ছবি
                               আশার   আলো          (এই গল্পটি আমার লেখা প্রথম গল্প আর এই গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল চালচিত্র পত্রিকায়( e-book) ....আজ আবার গল্পটিকে আমার বন্ধুদের জন্য দিলাম এই পেজে...... আর আমার এই ছোট গল্পটিতে যদি কোন বানান ভুল হয়ে থাকে তো আমি আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থী) মিলি আজ এক নতুন জীবনের আশায় দেরাদুনের পথে চলেছে । দুদিন পর থেকেই তার নতুন চাকরি তে জয়েন করার কথা । ট্রেনে যেতে যেতে কত কথা মনে পড়তে লাগলো । মনে পড়তে লাগলো তার স্কুল-কলেজ জীবনের কতকথা । তার বাবা-মায়ের কথা । বাবা- মা কখনোই তার এই বাইরে চাকরি করাটাকে মন থেকে মেনেনিতে পারেননি । মিলি ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বড়ো হলেও  ; তার মা তাকে শহরের আদব-কায়দায় তৈরী করেছিলেন । তারপর যখন সে কলকাতার কলেজে ভর্তি হল ইনজিনিয়ারিং পড়তে; তখন থেকেই সে কলকাতাকে যেন আরও বেশি করে ভাল বাসতে শুরু করেছিল । এর অবশ্য আরও একটা কারণ ছিল, যেটা সে সবায়ের অলক্ষ্যে সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিল ।আর সেটা হল তার ভালবাসার মানুষটি...

লকডাউন

ছবি
                                               লকডাউন পূর্ণিমাদেবীর আজ কদিন শরীরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছেনা। বয়সতো কম হলনা, এই পঁচাত্তর ছুঁই ছুঁই। আর সেভাবে শরীর চলে না। আজকাল হাতপা খুব কাঁপে, দু-পা চললেই হাঁপিয়ে পড়েন। চোখেও ভাল দেখেননা। তার উপর আজ দুদিন ঠিক মতো খাওয়াও জোটেনি। শরীরটা খুবই দূর্বল লাগছে। কোনো রকমে এই দুদিন দুটো করে মুড়ি-জল খেয়ে কেটেছে একবেলা করে। কিন্তু আজ তো ঘরে খাবারের এক কানাকড়িও নেই। এদিকে খিদেয় পেটে মোচড় দিচ্ছে। সকালে উঠে ঘরদোর টা বহু কষ্টে পরিষ্কার করে কোনো রকমে টাইমের কল থেকে এক বালতি খাওয়ার জল তুলে নিয়ে, একেবারে স্নান করে ঘরে ঢুকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রনাম করে তার ঝুপরি ঘরের দোরের কাছে বসে, ভাবতে বসলেন যে আজকের দিনটা কিভাবে গুজরান হবে। কিন্তু ভেবেও কোনো কুলকিনারা পেলেন না। দুচোখ ভরে জল চলে এল । খিদের জালা যে বড়ো জালা! মনে মনে বললেন, "এই বুড়ো বয়সে কি না খেতে পেয়ে মরতে হবে ভগবান ?" এমনটা তো তাঁর সাথে হওয়ার কথা ছিলোনা? এখনতো নাতি-নাতনী, ছেলেপুলে নিয়ে...

ভৌতিক গল্প

ছবি
                                        বিচার সময়টা ঊনিশশো সত্তরের গোড়ার দিকে। গ্রীষ্মের কোনো একরাতে একটি গ্রাম্য পুলিশ ফাঁড়িতে বসে ইন্সপেক্টর সুমিত মিত্র বেশ কয়েকটি ফাইলে চোখ বোলাছিলেন। এমনসময় থানার একমাত্র দেওয়াল ঘড়িটাতে ঢংঢং করে  রাত এগারোটা বাজলো । সুমিতবাবু সে দিকে একবার চাইলেন । তারপর ফাইলপত্র গুছিয়ে দেরাজে তুলে রেখে ফাঁড়ি থেকে বেরোলেন মতিলাল হাবিলদারকে নিয়ে বড়োগাঁয়ের দিকে । ঐ এলাকায় নাকি খুব মদের ঠেক আজকাল বেড়েই চলেছে। তাই রাতের বেলায় এই অভিযান । মতিলাল আর তিনি দুজনে মিলে জীপে চড়ে বসলেন। সুমিতবাবু হলেন একজন সৎ এবং কর্মঠ ইন্সপেক্টর। তিনি কখনো কাজে ফাঁকি দেননা। এই অঞ্চলে দিনপনেরো আগে তিনি বদলি হয়ে এসেছেন। প্রতিদিনই তিনি আসেপাশের অঞ্চলগুলোতে টহল দেন প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত । আজও তাই বেরিয়েছেন। নির্জন গ্রাম্যপথ ধরে তাদের গাড়িটা এগিয়ে চলেছে। এমনসময় হঠাৎ রাস্তার মাঝখানে গাড়িটা দাঁড়িয়ে পড়ায়, তিনি ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছে? "স্যার সামনে দাঁড়ানো মেয়েটি দ...

অনুগল্প (থ্যালাসেমিয়া)

ছবি
                                         থ্যালাসেমিয়া                 (অনিচ্ছাকৃত বানান ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থী) আজ ৮ই মে , বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। কথাটা ভেবেই ঝরনার মুখে ম্লান হাসি খেলে গেল। হ্যাঁ!  ঝরনা একজন থ্যালাসেমিয়া পেইশেন্ট। দেড় বছর বয়সে তার এই রোগ ধরা পড়ে, আর তখন থেকেই তাকে রক্ত নিতে হয়। তার জীবনটাই কেমন পরিহাস না ? যেখানে দেড়বছরের বাচ্চার রক্ত কি জিনিস বোঝার বয়সই হয়না; তখন থেকেই রক্ত আর সূঁচের সাথে তার গাঁটছড়া বাধা হয়ে যায়। কখনো কখনো পাঁচ-সাতবার সূঁচ ফুটিয়ে তার ছোট্টো ছোট্ট দুটো হাতপা ফুলে একসার হয়ে যেত, কখনো সূঁচ শিরায় ঠিকঠাক ফোটানো না হলে মাংশপেশীর মধ্যে রক্ত গিয়ে ফুলে কালশিটে পড়ে যেত আর তার সাথে  হতো প্রচন্ড যন্ত্রণা; আর হতোই বা বলছি কেন এখনোও তো  হয় । যখন সে আর একটু বড়ো হল, তার পাড়া- প্রতিবেশীরা তাকে জিজ্ঞেস করত, " হ্যাঁরে তুইযে রক্ত নিস, তোর লাগেনা, কষ্ট হয়না?" সে মুখে হাসি ফুটিয়ে বলতো," না গো আমার একটুও লা...